অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় হাজী সেলিমের ১৩ বছরের কারাদণ্ড হলেও সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন তিনি। যদিও সেই নির্বাচনে নিম্ন আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় অনেকেরই প্রার্থীতা বাতিল করে দেয় ইসি ও আপিল বিভাগ। হাইকোর্ট খালাস দিলেও আপিল বিভাগ নিম্ন আদালতের দণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টে আবার শুনানীর আদেশ দিলেও সেটির শুনানী হয়নি প্রায় পাঁচ বছরেও।
সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে হাজী মো. সেলিম দলে যোগ দিয়েই সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়ে নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য। সংসদে তার বক্তব্য হাস্যরসের সৃষ্টি করলেও হরতাল বিরোধী মিছিল নিয়ে রাজপথে তার উপস্থিতি ভীতির সৃষ্টি করতো। কিন্তু ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ফেল করে রাজনীতি আর দেশ থেকে লাপাত্তা হয়ে যান হাজী সেলিম। ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে তার বিরুদ্ধে শতাধিক ফৌজদারি মামলা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে করা রাজনৈতিক ও হয়রানিমূলক মামলা হিসেবে ১০৫টি ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। সে জন্য তিনি প্রত্যেকটির জন্য একটি করে আবেদন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনও আসামির এই জাতীয় আবেদন সেটাই সর্বোচ্চ।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১/১১র সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের মামলা করে দুদক। সেই মামলায় ২০০৮ সালে বিচারিক আদালত হাজী সেলিমকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দেয়। দেশে ফিরে ২০০৯ সালে আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে গেলেও জামিনে মুক্তি পান। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাজী সেলিমকে ট্যাকনিক্যাল গ্রাউন্ডে খালাস দেয় হাইকোর্ট। এ বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে যায়। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে নিম্ন আদালতে দণ্ডিত সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। সেই থেকে আর শুনানী হয় নি। পলাতক থাকায় ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন নি হাজী সেলিম। কিন্তু ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থি হয়ে এমপি হন তিনি। ২০১৫ সালে তার দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টের খালাস বাতিল করে আপিল বিভাগ নিম্ন আদালতের দণ্ড বহাল রাখলেও নির্বাচন করেন সংসদ সদস্য হন হাজী সেলিম। দশম জাতিয় সংসদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে এমপি হলেও ২০১৮ সালের একাদশ সংসদে এম পি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে, যখন তিনি রোগে আক্রান্ত হয়ে বাক শক্তি হারান। আহাম্মেদ সরোয়ার, বাংলাভিশন, ঢাকা।